নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন সিনিয়র নারী কর্মকর্তার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দেশটি এক কূটনৈতিক দুঃস্বপ্নের মধ্যে রয়েছে। প্রায় ১০ দিন আগে একটি টিভি বিতর্কে করা নূপুর শর্মা নামে ভারতীয় এক নারীর মন্তব্য ভারতীয় মুসলমানসহ বিশ্বব্যাপী অনেক মুসলিম দেশকে ক্ষুব্ধ করেছে।

কে এই ভারতীয় নারী যার আপত্তিকর মন্তব্যে গভীর সংকটে রয়েছে দেশটি?

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন সিনিয়র নারী কর্মকর্তা

নূপুর শর্মাঃ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্রী মিসেস নূপুর শর্মা ২০০৮ সালে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP) এর প্রার্থী হিসেবে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসায় আইনে স্নাতকোত্তর করার পর ২০১১ সালে দেশে চলে আসার পর তার রাজনৈতিক কর্মজীবনের গতি বেড়ে যায়। উজ্জ্বল বর্ণের এবং স্পষ্টভাষী, বিতার্কিক, ইংরেজি ও হিন্দি উভয় ভাষায় বক্তৃতার ক্ষমতা তাকে বিজেপির মিডিয়া কমিটিতে স্থান করে দিয়েছিল ২০১৩ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। দুই বছর পর যখন নতুন নির্বাচন ডাকা হয়, তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। এটি এমন কোনো নির্বাচন ছিল না যে, কেউ তার জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশা করেছিল, কিন্তু তার উদ্যমী প্রচারণা তাকে আরও লাইমলাইটে নিয়ে এসেছে – তাকে দিল্লিতে দলের একজন সরকারী মুখপাত্র নিযুক্ত করা হয়েছিল এবং ২০২০ সালে বিজেপির “জাতীয় মুখপাত্র” হয়েছিলেন নূপুর শর্মা।

গত কয়েক বছরে শ্রীমতি শর্মা ভারতীয় টিভি দর্শকদের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। বেশিরভাগ সন্ধ্যায়, তাকে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হেনস্তা করতে দেখা যায়। বিভিন্ন সময়ে অনেককে হেনস্থা করে পার পেলেও শেষ রক্ষা হয়নি ভারতীয় এই নারীর। বিশেষ করে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে ব্যাপক চাপে পড়ে ভারতকে বেকায়দায় ফেলেছেন তিনি।

ফলস্বরূপ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তার বক্তব্যের নিন্দার পাশাপাশি ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া বিবৃতি দেয় কুয়েত, ইরান ও কাতার এবং সৌদি আরব। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। ফলে মিসেস শর্মাকে তার “নিন্দাজনক মন্তব্যের” জন্য গ্রেপ্তারের জোর দাবি ওঠেছে। পাশাপাশি কয়েকটি বিরোধী শাসিত রাজ্যে পুলিশ তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। মঙ্গলবার একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর কাছ থেকে তার জীবননাশের হুমকির কথা উল্লেখ করে দিল্লি পুলিশ তার নিরাপত্তাও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ